(১)
যারে আমি "আমি"বলি
সেই শক্তিটুকু যাবে নিভে
এই দেহে, যেমন করে
মোমবাতির আলো নেভে।
চারধারে থাকবে এমন
হাজার আলো, দেখো তুমি
তার মাঝে আমায় পাবে
খুঁজো তুমি ।
যে মহাশক্তি ধরেছে ভুবনে
তারই এক ফোঁটা "আমি" হয়ে
দিয়েছিল ধরা, বেসেছিল ভাল,
গেয়েছিল গান, মেখেছিল আলো,
নিয়েছিল শোক অপমান কঠিন জীবনভার
জেনো সবই খন্ড খন্ড আনন্দ তার।
(২২/০২/২০১৯)
(২) গান
দূর থেকে আসে তোলপাড়
নীরবে আছড়ে পড়ে
ভাঙে দেহমনের পাড়।
তারই টানে সূর্য পানে
পৃথিবী ফেরায় মুখ
সেই টানে দেহ মনে
জেগে ওঠে দুঃখ সুখ।
পূজা তার হয় সকলখানে
সকল মনে জাগে সাড়।।
তারই পূজায় চৈত্র আকাশ
চাঁদের টিপ কপালে দিলো
দখিন হওয়ায় নারকেল পাতায়
চিকচিক করে চাঁদের আলো।
তার পূজাতে পাতার ছায়া
মাথায় নিয়ে জোসনা মায়া
বুকের ভেতর ঢেকে রাখে
ব্যাকুল পাখির আকুল গাওয়া।
তারই পূজায় ঝরা পাতার
মর্মবেদন ওঠে ভেসে
উদাস হাওয়ায় ছায়াপথে
গায় জয়গান কেঁদে কেঁদে।
তারই পূজায় নতুন রঙে
সাজল আকাশ নতুন করে
অবুঝ বোধ উথলে উঠে
বসল জেঁকে ভাষার বাইরে।
জীবন ফোঁটায় ধরল কী এক
বোঝাব তা কেমন করে
ভাষায় পাইনে কেবল উচ্ছাস
উচ্ছসিয়া আবার অসাড়।
দূর থেকে আসে তোলপাড়
নীরবে আছড়ে পড়ে
ভাঙে দেহমনের পাড়।
(২২/০৩/২০১৯: দক্ষিনশ্রীপুর)
(৩)
চৈত্রের রাত চাঁদের ফাঁদ
পাতার ফাঁকে,
ঝিরিঝিরি হাওয়া মনপ্রাণে বওয়া
কোকিল ডাকে।
চিকচিক আলো দেখায় ভালো
নারকেল পাতায়,
ছায়ার বনটা জোছনার ঘোমটা
টেনেছে মাথায়।
যেটান সুখে সূর্য মুখে
পৃথিবীর মুখ
সেই যে টানে দোলা আনে
হৃদয় উন্মুখ।
আজ চৈত্রে কোন মৈত্রে
কিসের তোড়ে
জীবনপাত্র উছলি মাত্র
উথলে পড়ে।
(২২/০৩/২০১৯: দক্ষিনশ্রীপুর)
(৪)
কুন্ঠিত হয়ে ঢেকে রাখি
নিজের আলো যত
লোভ করে ভালো সেজে
নিজেকে হারাই তত।
সংকোচে অবগুণ্ঠিত
চঞ্চল ব্যস্ত ত্রস্ত
নিজের আলো ছড়ালাম না
জীবন গড়িয়ে অস্ত।
লোভের শিখায় কামনা জ্বেলে
অন্তর্মুখী হলাম শুধু
মন তলাতে না পেরে
পেলাম ছাই মরু ধুধু।
(২৬/০৩/২০১৯: দক্ষিনশ্রীপুর)